অনলাইন ডেস্ক
জন্ম, মৃত্যু এবং বিয়ে— এই তিনটি আপনার জীবনে নিজেকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়। আপনার পৃথিবীতে আগমনে প্রতিবেশীরা ছুটে যান দেখতে, ঠিক তেমনই আপনার মৃত্যুতেও একবার শেষদেখা দেখতে ছুটে যান মানুষ। আরেকবার মানুষ নতুন করে দেখেন, বিয়েতে। অনেক দিনের চেনার পরও নতুন করে আরও একবার আপনাকে একনজর দেখেন।
এ কথা অপ্রাসঙ্গিক মনে হলেও বিয়ের পর এই নতুন দেখার অর্থ হচ্ছে— আপনার জীবনের গতিপথ নতুন করে চলা। প্রত্যেকের জীবন নতুন করে সাজাতে হয়। আসে নতুন দায়িত্ব, সম্পর্ক জানা আর অনুভূতি। কারণ বিয়ের পর নারীর শরীরও বদলে যায়, বদলে যায় তার হরমোন। আর বিয়ের পর এই পরিবর্তন শুধু মানসিকভাবেই ঘটে না, শারীরিকভাবেও প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে নারীর ক্ষেত্রে। আর বিয়ের পর নারীর হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, যা অনেক সময় শারীরিক ও মানসিক সমস্যার কারণ হতে পারে।
বিয়ের পর নারীর শরীরে কেন হরমোন পরিবর্তন হয়? এটি খুবই স্বাভাবিক বিষয়। কারণ বিয়ের পর জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন আসে। ঘুমের সময়সূচি বদলে যায়, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসে, মানসিক চাপ, নতুন পরিবেশে মানিয়ে চলা — সব মিলিয়ে শরীরে কর্টিসল ও অ্যাড্রেনালিনের মতো হরমোন বেড়ে যায়। এ হরমোনগুলো বেড়ে গেলে স্ট্রেস বা উদ্বেগও বেড়ে যায়। আর জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসায় এস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের মতো প্রজননসংক্রান্ত হরমোনের ওঠানামাও দেখা দিতে পারে। ফলে ঋতুচক্রে পরিবর্তন, ব্রণ, ওজোন বৃদ্ধি বা কমে যাওয়া, ঘন ঘন ক্লান্তি, বিরক্তিভাব, ঘুম সমস্যা এবং মুড সুইং দেখা দিতে পারে।
এটা শুধু নারীর ক্ষেত্রেই পরিবর্তন নয়, পুরুষরাও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যান। পুরুষের শরীরেও বিয়ের পর পরিবর্তন দেখা যায়। খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার কারণে টেস্টেসটেরন হরমোনের মাত্রা কমে কিংবা বেড়ে যায়। টেস্টেসটেরন কমে গেলে ক্লান্তি, ওজোন বৃদ্ধি ও মানসিক চাপ বেড়ে যায়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, বিয়ে ও শারীরিক পরিবর্তনে আমাদের করণীয়। বিয়ের পর শরীরে হরমোনের পরিবর্তন খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। এটি নিয়ে একটু সচেতন থাকলেই নিজেকে সুস্থ রাখতে পারবেন আপনি।
প্রথমত সুষম খাদ্যগ্রহণ করা উচিত। প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি, ফলমূল, আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
দ্বিতীয়ত প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। এর ফলে প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমে আপনার শরীরের কর্টিসল হরমোন কমাতে সাহায্য করবে।
আর হরমোনজনিত সমস্যা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে কিংবা লক্ষণগুলো বেশি তীব্র হয়ে গেলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।